ডিশ ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে হত্যার হুমকি দেন নুরুল : র‌্যাব

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

গরুর মাংস ব্যবসায়ী খলিলুর রহমানকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র‌্যাব। গতকাল শনিবার রাতে আশুলিয়া থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
গ্রেপ্তাররা হলেন, নুরুল হক (৬৭) ও তাঁর অন্যতম সহযোগী মোহাম্মদ ইমন (২২)।
সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারদের মধ্যে নুরুল হক দীর্ঘদিন ধরে ডিশ ও ইন্টারনেট লাইনের ব্যবসায় করে আসছিলেন। তাঁর এ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ সেলিমের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে কিছুদিন আগে সেলিমের সঙ্গে মারামারি হয় নুরুল হকের। এতে তাঁর ব্যবসায় ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।
পরে এক ব্যক্তি নুরুল হককে মাংস ব্যবসায়ী খলিলের মোবাইল নম্বরে কল করে ‍হুমকি দিতে বলে। হুমকির বিনিময়ে নুরুল হক তাঁর ব্যবসায়র কাজে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে না বলে জানায়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গত বছরের ১৯ নভেম্বর রাজধানীর শাজাহানপুরের মাংস ব্যবসায়ী খলিল তাঁর ‘খলিল গোস্ত বিতান’ এ ৫৯৫ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি শুরু করেন, যা ব্যাপক সাড়া ফেলে। পরে খলিলের দেখাদেখি আরো কিছু মাংস ব্যবসায়ী প্রতি কেজি ৬০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি শুরু করেন।
এরপর গত ২২ ডিসেম্বর ভোক্তা অধিদপ্তর, মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন সম্মিলিত বৈঠক করে ৬৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়। এমন সিদ্ধান্তে ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। এ ঘট্নায় মুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ীরা খলিলসহ অন্য ব্যবসায়ীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া শুরু করে।
তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে রাজশাহীর বাঘার আড়ানী হাটে ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করায় একজন মাংস ব্যবসায়ী খুন হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ জানুয়ারি রাজধানীর শাহাজাহানপুরের আলোচিত মাংস ব্যবসায়ী খলিলুর রহমানের মোবাইল ফোনে একটি নম্বর থেকে কল করে ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা করে।
একই সঙ্গে কম দামে মাংস বিক্রি করলে তাঁকে ও তাঁর ছেলেকে দুই দিনের মধ্যে গুলি করে হত্যার হুমকিসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। শুধু তাই নয়, খলিল ও তাঁর ছেলেকে হত্যার জন্য গুলি ও পিস্তল প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে খলিলের মোবাইল ফোনে পিস্তল, গুলি, রামদা এবং মাথা ছাড়া লাশের ছবি পাঠায়।
এ ঘটনার পর খলিল রাজধানীর শাহাজাহানপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর জড়িতদের গ্রেপ্তারে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে নুরুল হক ও ইমনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে হুমকির বিষয়ে বিস্তারিত জানায়। হুমকির পর মোবাইল ও সিম কার্ডটি তাঁরা পানিতে ফেলে দেয় বলে জানিয়েছে।
র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, নুরুল হক এলাকায় চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। নুরুলের নামে আশুলিয়া থানায় হত্যার হুমকি, চাঁদাবাজি এবং মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধে চারটির বেশি মামলা রয়েছে। আর ইমন দীর্ঘদিন ধরে নুরুলের ডিশের ব্যবসার কাজে সহায়তা করতেন। এ ছাড়া তিনি নুরুলের অপকর্মের সঙ্গেও তিনি জড়িত।

Related posts

Leave a Comment